ভোটকে গ্রহণযোগ্য করতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ন্যূনতম ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আসছে একাধিক প্রস্তাবনা। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা।
দেশে অতীতে সংসদীয় গণতন্ত্র বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত এবং রাষ্ট্রপতি শাসিত দুই ধরনের সরকার ব্যবস্থাই দেখা গেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে নির্বাচনকালীন সরকারের ভিন্নতার বিষয়টিও নজরে এসেছে।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে সেই আসনের ফল বাতিল বা পুনরায় নির্বাচন করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে সংস্কার কমিশন। এছাড়া ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হবে। নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি ওঠে। সে অনুযায়ী নির্বাচন সংস্কার কমিশন ইসিকে শক্তিশালী করাসহ ভোট বাতিলের ক্ষমতা, নির্বাচনে আদালতের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ, আরপিওতে সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। প্রস্তাবনায় থাকছে ভোটের হারের নিদিষ্ট করার বিষয়টিও।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য মীর নাদিয়া নিভিন বলেন, নির্দিষ্ট আসনে আবশ্যিক মাত্রার ভোটারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যেয়ে ‘না ভোট’ যদি বিজয়ী হয় তাহলে সেই আসনে পুনরায় ভোটের ব্যবস্থা করা হবে। একটা নির্দিষ্ট শতাংশ ভোটারের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকতে হবে। এটি না হলে, মানুষ কেন ভোট বর্জন করছে, সেই আলাপও উঠে আসবে। এ বিষয়ে প্রস্তাবের জন্য আলোচনা চলছে।
এ ছাড়া, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে নির্বাচনের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে উপজেলা, ইউপি, সিটি কর্পোরেশনসহ সারা দেশের স্থানীয় সরকার কাঠামোর জনপ্রতিনিধিরা। এছাড়া নতুন সিস্টেমে সংসদের দ্বিকক্ষের (উচ্চকক্ষ) ভোটও থাকবে বলে জানান তিনি।
কমিশনে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি সাদিক আরমান বলেন, শুধুমাত্র যেসব আসনে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোটের কম ভোট পড়বে সেখানে ভোট বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন করার ব্যপারে প্রস্তাবনা দেয়া হবে। পরিমাণ হিসেবে শতকরা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট প্রস্তাবনায় উল্লেখ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অনেকগুলো খসড়া পরিকল্পনা রয়েছে। সবগুলো নিয়েই আলোচনা চলছে। পরবর্তীতে যারাই নির্বাচিত হবে, তাদের দায়িত্ব থাকবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা।
এর আগে টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিগত ৩টি সংসদ নির্বাচন, ভোটার উপস্থিতি ও ভোটের হার ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আগামী নির্বাচনগুলো যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেটি সংস্কার করার জন্যই কাজ এগিয়ে নিচ্ছে কমিশন।
কালের সমাজ/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :