বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব আগেই দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সাবেক এক সামরিক কর্মকর্তার কলকাতা ও বাংলা নিয়ে করা মন্তব্যের বিষয়ে কথা বললেন তিনি।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন এক কর্মকর্তার একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ৪ দিনে কলকাতা দখল করে নেয়ার কথা। আবার বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী সম্প্রতি বলছেন, অশুভ ইচ্ছার মাধ্যমে ভারত সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন অব্যাহত রাখলে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দাবি করবে বাংলাদেশ।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিধানসভায় পাল্টা মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘আমরা বসে ললিপপ খাবো না।’ এদিন বিধানসভায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ‘ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।’
মমতা বলেন, ‘যারা বলছেন, বাংলা-বিহার-উড়িশ্যা দখল করবেন, তারা ভাল থাকবেন। আপনার সেই ক্ষমতাও নেই, আর ভাববার কোনও কারণ নেই যে, আমরা বসে ললিপপ খাবো। আমরা যথেষ্ট সক্রিয় এবং যথেষ্ট ধৈর্যের পরীক্ষা দিই। আমরা সবাই সবাইকে রক্ষা করবো।’ মমতা এ-ও বলেন, ‘আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।’
বাংলা দখলের প্রসঙ্গ যখন উঠেছে তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিক্রিয়া দেবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এটাও স্পষ্ট করেছেন, ‘গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে এবং তারাই ব্যবস্থা নেবে। আমরা কোনও পক্ষে নেই। আমরা সব পক্ষে। আজ বিদেশ সচিব বাংলাদেশে গেছেন। দেখা যাক কী হয়। আমাদের নীতি হলো- আমরা বিদেশনীতি মেনে চলবো।’
এদিন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় বিধায়কদের মন্তব্য করা থেকে সতর্ক করে দেন। তার সতর্কবার্তা, কোনও অতিরিক্ত মন্তব্য করবেন না যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। একই বার্তা রাজ্যবাসীকেও দেন তিনি। সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে বলেন, ‘দাঙ্গা হিন্দু করে না, দাঙ্গা মুসলমান করে না, দাঙ্গা করে কিছু সমাজবিরোধী।’
এদিন ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশকেও এক হাত নেন মমতা। পরোক্ষভাবে বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘কয়েকটা মিডিয়া যা করছে তা যথাযথ নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে, আপনাদের ব্যান করবো। কিন্তু আবেদন করছি, যথাযথ থাকুন। ফেক ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল করছে। রাজনীতি করবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
কালের সমাজ/এ.স/আ.য
আপনার মতামত লিখুন :