ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের রেলপথ-সড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ

কালের সমাজ | নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ০১:৩৭ পিএম শিক্ষার্থীদের রেলপথ-সড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্তি বাতিল করে ৭ কলেজের সমন্বয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আজও রাজধানীর মহাখালীতে সংলগ্ন রেলগেট, সড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সকালে ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল চেয়ে  স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ আন্দোলন করছেন তারা।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এমন অধিভুক্তি তারাও চাচ্ছেন না। অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন সময় আন্দোলন করতে দেখা গেছে। দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বাইরে খোদ ঢাবি প্রশাসনও সাত কলেজের অধিভুক্তি রাখার বিপক্ষে। রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

নতুন শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাত কলেজের কাজ না করার অনুরোধ জানিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আবার সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হলে প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। সাত কলেজ বাতিল না করলে পরীক্ষা শেষে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। সাত কলেজের কারণে ঢাবি শিক্ষার্থীদের আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে দাবি করে তারা বলেন, ঢাবি প্রাঙ্গণে সাত কলেজের ভবন নির্মাণ করা যাবে না। ঢাবি শিক্ষার্থীরা কোনো প্রহসন মেনে নেবে না।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি না মানলে রাজপথ থেকে ঢাবি প্রশাসনকে চাপ দেয়া হবে। রাজু, ভিসি অফিস, রেজিস্ট্রার ভবনে তালা দেয়া হবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

২০১৭ সালে শিক্ষার মানোন্নয়নে রাজধানীর সাত কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে দেয় তৎকালীন সরকার। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ সিদ্ধান্ত ছিল অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল, তা আট বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তাই এ অধিভুক্তি ধরে রাখা অর্থহীন। এজন্য তারা সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তাদের সংকট ও সমস্যার চিত্র তুলে ধরেন। সমস্যা সমাধানে তারা ঢাবির অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। এরপর একই দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সবগুলো কর্তৃপক্ষকে তারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে তারা কোনো পক্ষ থেকে আশ্বাস না পেয়ে অক্টোবরজুড়ে ধারাবাহিক বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার পর থেকে কলেজগুলোতে নানা ধরনের সমস্যা লেগেই রয়েছে। পাঠদানে সমন্বয়হীনতা, খাতার অবমূল্যায়ন, ফল বিপর্যয়সহ নানা সমস্যা এখনো চলমান রয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন। এর আগে এ কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত ছিল। সরকারি এ সাত কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করছেন কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা।

 

কালের সমাজ/এ.স./সাএ

 

Side banner