ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
ঝিনাইদহে

রাস্তা খুঁড়ে রেখে উধাও ঠিকাদার, উন্নয়নের নামে জনভোগান্তি চরমে

মোঃ হামিদ পারভেজ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম রাস্তা খুঁড়ে রেখে উধাও ঠিকাদার, উন্নয়নের নামে জনভোগান্তি চরমে

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী থেকে কাতলামারী বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ এখন এলাকাবাসীর জন্য যেনো এক স্থায়ী দুর্ভোগে রূপ নিয়েছে। ‘উন্নয়নের আশ্বাসে’ শুরু হওয়া এই প্রকল্প বর্তমানে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে রাস্তার এক পাশ খুঁড়ে ফেলে রেখে কার্যত উধাও হয়ে গেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন ভোর থেকেই এই সড়ক দিয়ে শত শত মানুষের যাতায়াত শুরু হয়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসমুখী কর্মজীবী, কৃষিপণ্যবাহী ভ্যান ও ট্রাকÑসব ধরনের যানবাহনের চলাচলেই চরম ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে। রাস্তার মাঝখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গর্ত আর খোঁড়াখুঁড়ির কারণে বড় যানবাহন মাঝপথেই থেমে যেতে বাধ্য হচ্ছে, ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষিকা হাসিনা পারভীন বলেন, “প্রতিদিন সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ভয়ে থাকি। রাস্তা এতটাই বিপজ্জনক হয়ে গেছে যে, একটু অসাবধান হলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। গত সপ্তাহে এক বৃদ্ধ ভ্যান থেকে পড়ে গিয়েছিলেন রাস্তার খানাখন্দে।”

ভ্যানচালক মন্টু শেখ জানান, “রাস্তার অবস্থা এমন যে, গর্ত এড়াতে গিয়ে প্রায়ই যাত্রীরা পড়ে যান। কখনো কখনো চাকা আটকে যায় ভাঙা জায়গায়। তখন আমরা দুজনেই বিপদে পড়ি।”

স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিনের ভাষ্য, “সকাল-বিকাল আমরা এই সড়কে চলাচল করি। রাস্তার যে অবস্থা, তাতে মনে হয় যুদ্ধক্ষেত্র পার হচ্ছি। ঠিকাদার শুরুতে কিছু কাজ করলেও পরে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।”

অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের এক পাশ খুঁড়ে রেখেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর থেকেই ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুমÑযিনি ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কোনো খোঁজখবর রাখেননি।

বিক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “সরকার উন্নয়নের কথা বলে বাজেট দেয়, অথচ এখানে শুধু দুর্ভোগই আমাদের কপালে জুটছে। রাস্তা খুঁড়ে রেখে যে উধাও হয়েছে, তার যেনো কোনো জবাবদিহি নেই।”

এই বিষয়ে একাধিকবার ফোন করেও ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, কাজ শিগগিরই আবার শুরু হবে। আর কাজ শুরু হলেই জনদুর্ভোগ কমে যাবে বলে আমরা মনে করি।

সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এর আগেও আমরা তাকে চিঠি দিয়েছিলাম। তিনি জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই কাজ শুরু করবেন। আমরা আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা যাবে।”

 

কালের সমাজ//ঝি.প্র//এ.জে

Side banner

পথে-প্রান্তরে বিভাগের আরো খবর