লব্ধপ্রতিষ্ঠ আলোকচিত্রশিল্পী ও ফটোসাংবাদিক কুদ্দুস আলমের তিনদিনব্যাপী ‘চর ও জীবন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর পর্দা নামল সোমবার। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে প্রদর্শনীর শেষদিন হওয়ায় সকাল থেকেই গাইবান্ধা পৌরপার্কের বিজয়স্তম্ভ প্রাঙ্গণে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। সন্ধ্যার পর মানুষের ঢল নামে—শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-প্রবীণ, সবাই ভিড় করেন শিল্পীর তোলা চরের জীবনের গল্প শুনতে ও দেখতে।
প্রদর্শনী শুরু হয়েছিল সকাল ৯টায় এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল রাত ৮টায়। কিন্তু দর্শনার্থীদের প্রবল আগ্রহের কারণে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চালাতে হয় প্রদর্শনী। ছবি দেখে অনেকেই শিল্পীর সঙ্গে সেলফি তুলেছেন, কেউ কেউ সরাসরি ছবি সম্পর্কে প্রশ্ন করে জেনেছেন চরের জীবনের না বলা গল্প।
তরুণ দর্শক ময়নুল ইসলাম জানান, “ছবিগুলো যেন জীবন্ত গল্প বলে। কুদ্দুস আলম চরের মানুষের সুখ-দুঃখ খুবই সংবেদনশীলভাবে তুলে ধরেছেন।”
প্রদর্শনী চত্বরে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও গুণীজন সংবর্ধনা। ‘এক টাকার মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত লুৎফর রহমান-কে দেওয়া হয় গুণীজন সংবর্ধনা। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল। পুরস্কার বিতরণ করেন শিল্পী কুদ্দুস আলম ও আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা মো. আবুল হোসেন সোহাগ মৃধা।
গোবিন্দগঞ্জ থেকে আগত আদিবাসীরা জানান, “এতো ভালো ছবি একসাথে দেখা সত্যিই আনন্দের ব্যাপার। চরের মানুষের জীবন, সংগ্রাম—সবই চোখে লেগে থাকবে।”
প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছিল গত শনিবার, উদ্বোধক ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী, মানবাধিকার কর্মী ও লেখক ড. শহিদুল আলম। তার উপস্থিতি প্রদর্শনীতে আরও গুরুত্ব এনে দেয়।
শেষ দিনে উপস্থিত দর্শকদের চোখে যেন একটাই অনুভব—এই প্রদর্শনী শুধু ছবি নয়, এটি চরের মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এক গল্প বলা।
কালের সমাজ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :