চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে বখাটেদের উৎপাত আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজের আশপাশ এবং চায়ের দোকানে বসে শিক্ষার্থীদের উপর তারা চালাচ্ছে মানসিক নিপীড়ন। এ অবস্থায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে অভিভাবক এবং ছাত্রীরা।
জানা যায়, বখাটেরা দলবেঁধে রাস্তায় অবস্থান করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের লক্ষ্য করে শিস দেওয়া, অশালীন মন্তব্য, ও প্রকাশ্যে ধূমপানের মতো কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে হুমকি দেয়ার ঘটনাও ঘটছে। ভয়ে অনেক অভিভাবকও প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না।
ঈদের দিন সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন বিকেলে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে বখাটেদের মধ্যে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে রান্ধুনীমুড়া গ্রামের দুই ওয়ার্ডের লোকজন জড়িয়ে পড়েন এবং কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
স্কুল-কলেজ কেন্দ্রিক উত্ত্যক্ততা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ১১নং ওয়ার্ডের রান্ধুনীমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, ৪নং ওয়ার্ডের আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, ৬নং ওয়ার্ডের হাজীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজ, বলাখাল বাজারের চন্দ্রবান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে বখাটেদের সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। তারা দোকানে বসে কিংবা গেটের সামনে অবস্থান করে ছাত্রছাত্রীদের উত্যক্ত করে যাচ্ছে।
শিক্ষক-অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা নিজেরাও বখাটেদের এ কর্মকাণ্ডে বিব্রত। শিক্ষকদের সম্মান না করে উল্টো খারাপ ব্যবহার করে। তারা সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন।
প্রশাসনের আশ্বাস
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দীন ফারুক বলেন, “বখাটেপনার বিষয়টি ইতোমধ্যে আমাদের নজরে এসেছে। চিহ্নিত এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং নিয়মিত পুলিশি টহল জোরদার থাকবে।”
সচেতন মহলের দাবি
সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করেন, কেবল পুলিশি তৎপরতা নয়, পরিবার ও সমাজের নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি দূর করতে হবে। তরুণদের মূল্যবোধ গঠনে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।
কালের সমাজ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :