জমির ধরণ ও পরিমাণ অনুযায়ী ঘুষ নির্ধারণ করে দেওয়ার অভিযোগে বিতর্কিত হয়ে পড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) উবায়দুর রহমান সাহেলকে বদলি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে তাকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় বদলি করা হয়।
বদলির খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন রূপগঞ্জের সাধারণ জমি মালিকরা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এসিল্যান্ড সাহেল নামজারির জন্য সরকার নির্ধারিত খরচের অতিরিক্ত হিসেবে জমির ধরণ অনুযায়ী ঘুষের রেট নির্ধারণ করে দেন।
`ক` তালিকাভুক্ত জমির নামজারিতে প্রতি শতকে ৫ হাজার টাকা, `খ` তালিকায় ৩ হাজার, এবং সাধারণ জমিতে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিতে হতো। রাজউকের পূর্বাচল উপশহরে তিন থেকে ১০ কাঠা পর্যন্ত প্লটে নামজারির জন্য নেওয়া হতো ২০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ।
অভিযোগ রয়েছে, আদায়কৃত ঘুষের ২৫ ভাগ ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ২৫ ভাগ সার্ভেয়ার ও কানুনগো এবং বাকি ৫০ ভাগ সাহেলের ভাগে যেত। এতে ভূমি অফিসে গড়ে ওঠে ঘুষ বাণিজ্যের একটি চক্র।
ভূমি মালিকদের অভিযোগ, শুধু অতিরিক্ত ঘুষই নয়, জাল দলিলে নামজারি, ভুল কাগজে রেকর্ড সংশোধন, এমনকি এক ব্যক্তির জমি অন্যজনের নামে নামজারি করাসহ নানাভাবে হয়রানি চালানো হতো।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাহেল ২০২৪ সালের জুলাই মাসে রূপগঞ্জে যোগদান করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পরও তিনি বহাল ছিলেন।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদান করা এসিল্যান্ড মোঃ তাছবীর হোসেন বলেন, “জমি মালিকরা যেন ঘুষ ছাড়াই দ্রুত ও ডিজিটাল সেবায় নামজারি করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই আমি কাজ করব।”
পূর্বাচল এলাকার মানুষ নতুন এসিল্যান্ডের কাছ থেকে দুর্নীতিমুক্ত ও জনবান্ধব ভূমি সেবা প্রত্যাশা করছেন।
কালের সমাজ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :