নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিন টেক্স গার্মেন্টসে শ্রমিক ছাঁটাই, বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য অসন্তোষ নিয়ে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে, যা সংঘর্ষে পরিণত হয়। এতে অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে সেনা, পুলিশ ও শ্রমিকরা রয়েছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের আউখাবো এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। তাদের দাবি ছিল, গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কোনো সুরাহা না পাওয়া এবং ঈদের আগে ৫০ জন শ্রমিকের ছাঁটাই নিয়ে অভিযোগ। শ্রমিকরা এই পরিস্থিতি নিয়ে আগেই কারখানার ভিতরে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন।
এদিকে, আজও তাদের দাবি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকরা পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন, যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে পরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করতে শুরু করেন এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক বন্ধ করে দেন। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যার ফলে পুলিশ, সেনা বাহিনী এবং শ্রমিকরা একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ৭০ জন আহত হন, তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মবিন, সদস্য সোহরাব, বাধন, মেহেদি, শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিউরসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, "আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের ওপর অকারণভাবে লাঠিচার্জ করা হয়। আমাদের ৫০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে ছাঁটাই করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়।"
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, "শ্রমিকদের সরাতে গিয়ে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে, এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সেনাকর্মকর্তা আহত হয়েছেন। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং সুষ্ঠু সমাধান হবে।"
এ ঘটনায় পুলিশ ৬ শ্রমিককে আটক করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, "ঘটনা শোনার পর আমি সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আমরা এখন ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।"
কালের সমাজ//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :