পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে জমে উঠেছে বৈশাখী মেলার প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামে মাটির তৈজসপত্র ও খেলনা তৈরিতে এখন প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে।
চৈত্রের মাঝামাঝি এই সময়ে মাটির হাঁড়ি-পাতিল, ঘোড়া, পুতুল, পাখি, ব্যাংক, কাপ-প্লেটসহ নানা রকমের সামগ্রী প্রস্তুতের শেষ ধাপে ব্যস্ত শিল্পীরা। কেউ মাটির ছাঁচে রঙ তুলির আঁচড় দিচ্ছেন, কেউবা রোদে শুকাতে দিচ্ছেন নতুন গড়া সামগ্রী।
মাটির অভাব, দাম বাড়তি রঙের
স্থানীয় মৃৎশিল্পী কল্পনা রানী পাল বলেন, “বৈশাখে মেলা উপলক্ষে অনেকেই শখের বসে মাটির সামগ্রী কেনেন। তবে এখন মাটির সংকট, তার উপর রঙের দাম বেড়েছে অনেক। কিন্তু পণ্যের দাম তেমন বাড়েনি। আমাদের খেলনা ২০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়।”
ঐতিহ্যের টানে টিকে থাকা
পরেশ পাল জানান, “বছরে এই একটা উৎসবেই একটু কাজের চাপ থাকে। বাকি সময় টানাপোড়েনে কাটে। পূর্বপুরুষের পেশা ধরে রাখার চেষ্টা মাত্র।”
নিরেশ পাল বলেন, “প্লাস্টিক ও মেলামাইনের দাপটে মাটির জিনিসের কদর কমে গেছে। তবে বৈশাখে কিছুটা চাহিদা বাড়ে বলে এই সময়ে বেশি কাজ করা হয়।”
ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
জগদীশ পাল ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “বাপ-দাদার পেশাকে ধরে রেখেছি। কিন্তু বিক্রি কম, লাভ নেই। তাই ছেলে-মেয়েদের এ পেশায় আনতে চাই না। মানুষ এখন ঐতিহ্যের চেয়ে প্লাস্টিকের প্রতি বেশি ঝুঁকছে।”
সংস্কৃতি রক্ষায় দরকার উদ্যোগ
মৃৎশিল্প কেবল জীবিকা নয়, এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য দিক। শিল্পীরা বলছেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ, সহায়তা এবং বাজার বিস্তারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। না হলে একদিন হারিয়ে যাবে এই প্রাচীন শিল্পধারা।
কালের সমাজ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :