ঢাকা সোমবার, ০৭ এপ্রিল, ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১

ফেলে রাখা নোনা জমিতে কোটি টাকা তরমুজ চাষ

সাইদুল্লাহ, খুলনা প্রতিনিধি এপ্রিল ৭, ২০২৫, ০৫:২২ পিএম ফেলে রাখা নোনা জমিতে কোটি টাকা তরমুজ চাষ

এক সময় যেসব জমিতে ধান ওঠার পর আর কিছুই হতো না, লবণাক্ততার কারণে সারা মৌসুম পড়ে থাকত অনাবাদি—এখন সেসব জমিই উল্টে দিয়েছে খুলনার উপকূলীয় কৃষকদের ভাগ্যের চাকা। জমিতে এখন মাঠের পর মাঠ সবুজ লতা, তার ফাঁকে ফাঁকে ডোরাকাটা আলপনায় আঁকা মিষ্টি তরমুজ।

শনিবার (৫ এপ্রিল) কয়রা উপজেলার বিভিন্ন তরমুজখেতে ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা ছুটে এসেছেন তরমুজ কিনতে। কোথাও তরমুজ গাছের নিচে শোভা পাচ্ছে সদ্য ফল ধরা তরমুজ, আবার কোথাও স্তূপ করে রাখা শত শত তরমুজ বিক্রির অপেক্ষায়।

স্থানীয় চাষিরা জানান, পাঁচ বছর আগেও এসব জমি চাষের অনুপযোগী বলে ধরা হতো। আমন ধানের মৌসুমের পর জমিগুলো অনাবাদি পড়ে থাকত। কারণ শুষ্ক মৌসুমে উপকূলীয় এই এলাকায় লবণাক্ততা বেড়ে গিয়ে মাটিতে কিছুই হতো না।

কিন্তু এখন সেই জমিতেই লবণসহিষ্ণু জাতের তরমুজ চাষ করে চাষিরা লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ পর্যন্ত লাভ সম্ভব হওয়ায় কয়রার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে।

চাষিরা জানান, মাত্র তিন মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। অনেকে আবার লাখ টাকারও বেশি আয় করছেন। বিশেষ করে "মধুবন্দর", "রেড কুইন", "ব্ল্যাক বয়" প্রজাতির তরমুজগুলো বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে।

তরমুজ চাষে সবচেয়ে বড় সুবিধা হিসেবে চাষিরা বলছেন—এতে পানির ব্যবহার কম, লবণাক্ত মাটিতে ফলন ভালো হয়, রোগবালাই তুলনামূলক কম এবং বাজারে চাহিদা বেশি।

কৃষি বিভাগ বলছে, এই সম্ভাবনাময় খাতে সহায়তা করতে প্রশিক্ষণ ও বীজ সরবরাহসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন, উপকূলীয় অঞ্চলের পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে তরমুজ চাষ হতে পারে আদর্শ মডেল।

ফলে এক সময়ের ফেলে রাখা লবণাক্ত জমিই এখন কোটি টাকার সম্ভাবনার খনি হয়ে উঠেছে।

 

কালের সমাজ//এ.জে

Side banner