সারাদেশে অবৈধ ইটভাটার মালিকরা এবং প্রভাবশালীরা সরকারি খাস জমি ও ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে। এর ফলে দেশের কৃষি জমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে খাদ্য সংকটের সম্ভাবনা তৈরি করছে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল ও সাধারণ জনগণ। এছাড়া, কয়লার পরিবর্তে গাছের কাঠ ব্যবহার করায় ইটভাটার কালো ধোঁয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে।
অবৈধ মাটি কাটা ও ইটভাটার কার্যক্রম
এপ্রিল ৭, ২০২৫ তারিখে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ভেকু নামক ইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে অবৈধ ইটভাটার মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গাজী খালসহ বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। সাভার, ধামরাই, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রায় ৪০০ ইটভাটা অবৈধভাবে চালানো হচ্ছে।
ঢাকার আশুলিয়া শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জানিয়েছেন, শিমুলিয়ায় মোট ৯টি ইটভাটা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মাটি বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে, তবে খাল থেকে মাটি কাটা না করার জন্য ইউপি সদস্যদের সতর্ক করা হয়েছে। তবে সরকারি নিয়ম অনুসারে রাস্তার পাশে ইটভাটা স্থাপন করা কতটুকু বৈধ, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান
পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট শাখা ও জেলা কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ধামরাই ও আশুলিয়ায় কয়েকটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে এবং কিছু ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চলমান রয়েছে। তবে, এর পরেও ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধ হয়নি এবং এসব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ফসলি জমির ক্ষতি ও ভবিষ্যৎ সংকট
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফসলি জমি ও সরকারি খাস জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে, যা কৃষি জমি সংকুচিত করছে। এতে আগামীতে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে, কারণ কৃষি জমির অভাবে প্রয়োজনীয় ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। দেশের কৃষি খাতের ক্ষতি হলে তা সার্বিক অর্থনীতির উপরও প্রভাব ফেলবে।
কালের সমাজ/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :