ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১

"চাঁদাবাজি ও দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই"

কালের সমাজ | জেলা প্রতিনিধি,কুষ্টিয়া জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম

জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা চাঁদাবাজ-দখলদারমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই। কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, "আপনারা কীভাবে এটা পারবেন?" তার প্রমাণ হলো, আমাদের দলের কর্মীরা কখনো চাঁদাবাজি করে না, দখলদাবাজিও করে না।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামী’র কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতে ইসলামী’র আমির অধ্যাপক আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াতে ইসলামী আমির বলেন, নারী-পুরুষের মধ্যে ব্যবধান এনে আমাদেরকে বলা হয়—যদি জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসে, তবে এদেশের মানুষ বিপদে পড়বে। তিনি বলেন, মহিলারা মায়ের জাতি, এবং আমরা তাদের মায়ের মতো সম্মান করি। যারা সন্তুষ্টির সঙ্গে বোরকা পরতে চাইবেন, তারা পরবেন। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য ধর্মের মায়েদের আমি কীভাবে বোরকা পরাবো? ইসলাম কি আমাদের এই দায়িত্ব বা অধিকার দিয়েছে? তার মতে, ইসলাম আমাদের এমন কোনো অধিকার দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, নারী-পুরুষ যে পোশাকটি পছন্দ করবেন, সেটিই পরবেন। পোশাক নিয়ে কোনো ধরনের জোর খাটানো যাবে না। নারীরা তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, আল্লাহর আইন সবার জন্য সমান। আমরা সেই আইনের জন্য সংগ্রাম করছি। আমি মানুষের মর্যাদা দেব। যদি প্রতিটি মানুষ একে অপরকে সম্মান করে ও ভালোবাসে, তাহলে এই দেশ জান্নাতের একটি টুকরোতে পরিণত হবে।

শফিকুর রহমান বলেন, এই রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সম্পদ, ইজ্জত ও জীবন সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। এদেশের সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম নির্বিঘ্নে ও নিরাপত্তার সঙ্গে পালন করতে পারবেন এবং ধর্ম পালনে কোথাও কোনো বাধার সম্মুখীন হবেন না।

জামায়াতে ইসলামী আমির বলেন, আমরা এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা উপহার দেব, যাতে এ দেশের যুবক-যুবতীদের সার্টিফিকেট নিয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে না হয়। কাগজের টুকরো নিয়ে চাকরি খোঁজার জন্য দৌড়াতে হবে না। পড়াশোনা শেষে তারা চাকরি বা কাজ পেয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, যুবক-যুবতীদের প্রতিটি হাতকে দেশ গড়ার কারিগরের হাত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ দেশের মানুষ আর চাকরির জন্য বিদেশে যাবে না; বরং একসময় বিশ্ব থেকে লোকেরা এদেশে চাকরি করতে আসত। সেই গৌরব ইনশাআল্লাহ ফিরে পাব।

তিনি আরও বলেন, যারা ধর্মের বিভাজন তৈরি করে মেজোরিটি ও মাইনোরিটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করেছে, তারাই ৫৩ বছর ধরে আপনাদের কষ্ট দিয়েছে। আমাদের দলের কেউই এসব অপকর্মে জড়িত নয়, অথচ দোষ চাপানো হয় আমাদের ঘাড়ে।

শফিকুর রহমান বলেন, এমন একটি সমাজ গড়তে হবে যেখানে চাঁদাবাজি ও ঘুষখোর থাকবে না, দখল বাণিজ্য চলবে না এবং মানুষে-মানুষে, ধর্মে-ধর্মে বৈষম্য থাকবে না। সেই সমাজ গড়ার জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে, এবং আমরা সেই লড়াই চালিয়ে যাব।

এই কর্মী সম্মেলনে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের ঢল নামে। সম্মেলন প্রাঙ্গণ ও আশপাশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। খুব সকাল থেকে শীত উপেক্ষা করে মানুষ জমায়েত হতে শুরু করে, এবং সম্মেলনস্থল ছাপিয়ে সড়কে মানুষের ঢল নামতে থাকে। শহরের বিভিন্ন সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।

কালের সমাজ/আ.য

Side banner